হ্যালো বৃষ্টিকন্যা বলছেন?
-জি না, আমি কুহু, বলুন, ফোন করেছেন কেন? আপনার টাকাটা পাঠিয়ে দিচ্ছি বিকেলেই, আপনার নম্বরে বিকাশ আছে?
-না বিকাশ নেই আর আমি সেজন্য ফোন করিনি। আপনি কেমন আছেন?
-হ্যা ভালো আছি, কিন্তু আমি ক্লাশে, একটু পর টিচার আসবে। আপনাকে পরে ফোন করছি!
পরে কুহু আর ফোন করেনি। ভুলে গিয়েছিল। কিন্তু দিন কতক পরে কলাভবনের গেটের সামনে জলপাই ভর্তা খাচ্ছিল, তখন হঠাৎ নীল গাড়িটা পাশে থামল। গাড়ি থেকে নেমে তৌসিফ জিজ্ঞেস করল, বৃষ্টিকন্যা কেমন আছেন? কুহু ভীষণ অবাক হয়ে বলল, আপনি এখানে?
-হ্যা, এপথ দিয়ে যাচ্ছিলাম আরকি!
-মোটেই না, আপনি আমার উপর নজর রাখছেন সম্ভবত। এখনও ইচ্ছে করেই এখানে আসছেন।
ধরা পড়ে তৌসিফ লুকাতে চেষ্টা করে না। সে হেসে বলল, হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন। আপনার সাথে একটু গল্প করা যাবে কিছুক্ষণ?
এই সময়ে একটা সাত আট বছরের বাচ্চা মেয়ে এসে বলল, ও স্যার বেলিফুলের মালা কেনেন, আপা রাগ করছে, মালা দিলেই রাগ কমে যাবে!
কুহু এমনিতে ওদের উপর বিরক্ত হয় না, আজ বিরক্ত লাগছে। এরা এই বয়সেরই ব্ল্যাক মেইল শিখে গিয়েছে।
তৌসিফ বলল, তাই, মালা দিলে রাগ পরে যাবে, তাহলে দাও। কত দাম?
তৌসিফ সবগুলো কিনে নিলো। পাশে একটা আইসক্রিমের ভ্যান ছিল। তৌসিফ বাচ্চাটাকে একটা আইসক্রিম কিনে দিলো। সত্যি বলতে, এই বিষয়টা কুহুর খুব ভালো লাগল।
-বৃষ্টি কন্যা, আপনার জন্য এই মালাগুলো, আপনি ফেসটা একটু সফট করতে পারেন, আমি তো খারাপ কেউ না! আপনাকে মনে হচ্ছে কোন রাগী ম্যাথ টিচার।
-না, তবুও বাচ্চাটা দিলো, তাই নিলাম।
কুহু ব্যাগ থেকে আড়াইশ টাকা বের করে তৌসিফকে দিয়ে বলল, এটা আপনি পাবেন আমার কাছে।
তৌসিফ বলল, হাতে মালা তো, কীভাবে নিবো!
কুমকুম মালা গুলো নিয়ে, তৌসিফের হাতে টাকাটা দিয়ে রিক্সায় উঠে চলে গেল। তৌসিফ টাকাটা হাতে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল।